জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

News

বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতি কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস-২০২১ পালন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান ১৪.০৮.২০২১ তারিখ রোজ শনিবার রাত ৯.০০ টায় অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ.ক. ম মোজাম্মেল হক এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু গবেষক, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির সভাপতি বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. মোঃ মিজানুর রহমান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সভাপতি মহোদয় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছাসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তার পরিবারের সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন।

সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ হামিদুর রহমান তুষারের চমৎকার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে একটি ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়। অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত, ফাতেহা পাঠ, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা, বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির যে সকল সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের এবং যে সকল সদস্য অসুস্থ রয়েছেন তাদের ওপর মাগফেরাত ও সুস্থতা কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির সহসভাপতি, বাংলাদেশ ব্যাংক লাইব্রেরীর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আলহাজ্ব মুহাম্মদ মহিউদ্দিন হাওলাদার।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির সহ-সভাপতি কাজী আবদুল মাজেদ, মুখ্য আলোচক হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তরুণ প্রজন্মের অহংকার, সব্যসাচী লেখক ও গবেষক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং ডীন, প্রফেসর ড. মো: নাসিরউদ্দীন মিতুল। অনুষ্ঠানে সমগ্র দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় দুই শতাধিক সদস্য জুম অনলািনইনে সংযুক্ত থেকে চ্যাটিং এবং ফেসবুকে লাইভে অংশ করে তাদের লিখিত মতামত প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও মুখ্য আলোচকদের আলোচনায় মাধ্যমে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পায় এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

১. শিশুকাল থেকে বাচ্চাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলার জন্য সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পদ সৃজন করে গ্রন্থাগার পেশাজীবী নিয়োগ।

২. বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর উপর প্রতিবছর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য নিয়মিত স্কলার্শিপ প্রদান করে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, নৈতিকতা, নেতৃত্বে ও ব্যক্তিত্বের গুণাবলী প্রকাশের জন্য উচ্চতর গবেষণার মাধ্যমে দেশ বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রিধারী প্রস্তুত করার ব্যবস্থা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং সঠিক ইতিহাস উপস্থাপনে একাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

৩. বাংলাদেশের যে সমস্ত প্রকাশনা বঙ্গবন্ধু তার জীবন কর্ম ও পরিবারের সদস্যদের উপর প্রকাশিত হচ্ছে সে বিষয়ে মানসম্পন্ন প্রকাশনা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে শহীদ পরিবারের উপরে কোন রচনা করতে গেলে পূর্বানুমতি গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং যে সকল প্রকাশনা বের হয়েছে সেগুলো যে সমস্ত তথ্যগত অসঙ্গতি রয়েছে সেগুলো দূর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪. বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর যারা তাঁর আদর্শ লালন করেন তাদেরকে তাদের মেধা ও মননশীলতা অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের প্রতি প্রতিনিয়ত যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সে বিষয়ে দেশের সকল পেশার মানুষকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

৫. স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতি ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: গ্রন্থাগারের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি তথ্যবহুল প্রকাশনা প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সভার কার্যবিবরণী সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করার জন্য মাননীয় প্রধান অতিথির সুদৃষ্টি আকর্ষন করা হয়।

অবশেষে, ‘অবিনশ্বর তুমি পিতা’ যমুনা টেলিভিশনের নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের মাধ্যমে সভাপতি মহোদয় আটটি বিভাগের সকল বিভাগীয় কাউন্সিলর, কার্যনির্বাহী পরিষদ, সংযুক্ত পেশাজীবী এবং তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ ও লালন করার আহ্বান জানিয়ে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সবার কাজ শেষ করেন।